জামাল লস্কর, নগরকান্দা- ফরিদপুর থেকে
নগরকান্দার লস্করদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বাবুল তালুকদার। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমার এক প্রতিপক্ষ, কয়েকজন নিরিহ অসহায় লোকদের ফুসলিয়ে তাদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে আমার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ দাখিল করে। যাহা সম্পূর্ন মিথ্যা, বানোয়াট, ভীত্তিহীন। অভিযোগে উল্লেখ আছে একই পরিবারের ১২ জনের নামে প্রধান মন্ত্রীর মানবিক সহায়তা খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছি। তাদের অভিযোগে যে ১২ টি নাম উল্লেখ করেছে- তারা একই পরিবার ভুক্ত নয়। ইউনিয়ন খানার রেজিস্ট্রী তালিকায় প্রত্যেকের নামে আলাদা আলাদা খানা রয়েছে। সেই রেজিস্ট্রী বহিতে ২০১৬ সালে তৎকালিন ইউএনও আব্দুল আজিজ সাহেবের স্বাক্ষর রয়েছে এবং তারা চলতি বছর পর্যন্ত খানা ট্যাক্স পরিশোধ করেছেন।
যেহেতু এরা প্রত্যেকেই আলাদা আলাদা খানার মালিক এবং সবাই অসহায় ও দুস্থ তাই এরা ত্রান পাওয়ার যোগ্য।
তিনি আরো বলেন, সরকার ঘোষিত করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে দূর্যোগে বিশেষ মানবিক সহায়তা উপকার ভোগী তালিকা প্রস্তুত ওয়ার্ড কমিটি কর্তৃক নির্বাচিত। নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উক্ত অভিযোগের তদন্ত করে ঘটনা মিথ্যা বলে প্রমান পেয়েছেন।অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা জনস্বাস্থ্য দপ্তরের উপ সহকারী প্রকৌশলী আকবর মোল্যা জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে লস্করদিয়া ইউনিয়নের হাসনহাটি গ্রামে যাই। সরেজমিনে গিয়ে অধিকতর তদন্ত শেষে অভিযোগের কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি।
তিনি তার লিখিত তদন্ত প্রতিবেদনে জানান- অভিযোগে বলা হয়েছে একই পরিবারের ১২ জনের নামে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এ অভিযোগটির কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। উল্লেখিত ১২ জনের প্রত্যেকের আলাদা খানার তালিকায় নাম রয়েছে। অভিযোগকারীর মধ্যে তিন ব্যক্তি অসহায় হলেও তারা কোন প্রকার খাদ্য সহায়তা পায়নি বলে অভিযোগে উল্লেখ করে। এ বিষয়ে তদন্ত করে দেখাগেছে ২ নং অভিযোগকারী কাজী মোজাফ্ফরের মাতা আয়শা বেগম গত ১২/০৫/২০২০ তারিখে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে খাদ্য সহায়তা গ্রহন করেছেন। বিতরণ মাস্টার বহিতে তার ক্রমিক নং ১৮৪৪। ৩ নং অভিযোগকারী শওকত মাতুব্বরের স্ত্রী জরিনা খাতুন গত ১২/৫/২০২০ তারিখে খাদ্য সহায়তা গ্রহন করেন। যার ক্রমিক নং ১৮৪২। ৪ নং অভিযোগকারী হেমায়েত হোসেন গত ২২/০৪/২০২০ তারিখে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নিজেই মানবিক সহায়তা ত্রাণ সামগ্রী গ্রহন করেছেন। মাস্টার রোল অনুযায়ী যার ক্রমিক নং ১৮০৭।
এ বিষয়ে অভিযোগকারী কাজী মোজাফফর বলেন, আমরা অশিক্ষিত মানুষ, লেখাপড়া জানিনা। আমাদের এলাকার সাদেক মাস্টার আমাদের ত্রান দেওয়ার কথা বলে কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছে। আমরা জানিনা যে আমাদের স্বাক্ষর নিয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করবে। চেয়ারম্যান সাহেব একজন সন্মানী ব্যক্তি। সাদেক মাস্টারের ধোকাবাজীতে পড়ে না বুঝে স্বাক্ষর দিয়েছি। আমরা বড় একটি ভুল করেছি।
৩ নং অভিযোগকারী শওকত মাতুব্বর বলেন, আমরা আগে বুঝতে পারি নাই যে, সাদেক মাস্টার একজন ধোকাবাজ। আমরা সরল মনে উনার কথায় ত্রাণ পাওয়ার লোভে স্বাক্ষর করলাম। পরে জানতে পারলাম ঐ স্বাক্ষর নিয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, জালজালিয়াতির এ বিষয়ে আমরা সাদেক মাস্টারের বিচার চাই।